ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কাজের তদারকীতে নেই এলজিইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা

পেকুয়ায় এলজিইডির ব্রীজ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি!

*উপজেলা এলজিইডি অফিসের সাথে ঠিকাদারের আঁতাত

*ঠিকাদারের ইচ্ছেমতো নিন্মামনের সামগ্রী ব্যবহার কাজ করা হচ্ছে

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::

কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের বারবাকিয়া-শিলখালী সড়কের শিলখালী খালের উপর কোটি টাকার উপরে বাজেটের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর অধীনে ২০ মিটার দৈর্ঘ্যর একটি ব্রীজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ ঠিকাদার ও কাজ তদারকীর দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। র্দীঘদিন ধরে ঠিকাদার ব্রীজ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে যেনতেনভাবে কাজ চালিয়ে গেলেও ‘রহস্যজনক’ কারণে পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় অনিয়ম বন্ধে কোন ধরনের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ঠিকাদারের অনিয়ম ও পেকুয়া এলজিইডি অফিসের অবহেলার কারণে সরকারের মহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও এলাকাবাসীদের দেওয়া তথ্যে মতে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের পেন্ডির ব্রীজটি পরিত্যক্ত হওয়ায় সেটি ভেঙ্গে গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে পেকুয়া এলজিইডি অফিসের তত্বাবধানে কোটি টাকার উপরে বাজেটের একটি ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। ব্রীজ নির্মাণের জন্য এলজিইডি কর্তৃক ঠিকাদার নিযুক্ত হন চট্টগ্রামের পটিয়ার মেসার্স নিপা কন্স্ট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্টান। কাজের শুরু থেকেই ব্রীজ নির্মাণে অত্যন্ত নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে আনুসাঙ্গিক কাজ করলেও পেকুয়া এলজিইডি অফিস রহস্যজনক কারণে অভিযুক্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর ফলে দ্বিগুণ উৎসাহে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদার ব্রীজ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো ব্রীজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। যেন দেখার বা তদারকীর করার মতো কোন সরকারী দফতর নেই।

গতকাল ৯ নভেম্বর ২০২৩ ইংরেজী তারিখে বিকাল ৪ঘটিকার দিকে এ প্রতিবেদক সরেজমিন ব্রীজ নির্মাণের স্থান পরিদর্শনকরে অনিয়ম ও দূর্নীতির চিত্র স্বচক্ষে দেখেছেন। নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঠিকাদার ব্রীজ নির্মাণ কাজ করায় বিভিন্ন স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। এখন ব্রীজের ছাঁদ ঢালাই দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অভিযুক্ত ঠিকাদার। ছাঁদ ঢালাই দেওয়ার জন্য ব্রীজ এলাকায় রাখা হয়েছে অত্যন্ত নি¤œমানের পাথর ও ইটের কংকর। আর কয়েকদিন পরেই এসব নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করেই ব্রীজে ঢালাইয়ের কাজে করবেন এমনটাই আশংকা রয়েছে।

ব্রীজ নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস নিপা কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিউজ করলে কি হবে, যে পরির্দশনে আসবে তাকে আমরা ম্যানেজ করবো।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পেকুয়া এলজিইডির অফিসে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: শাহজালাল ওই ব্রীজ নির্মাণ কাজের তদারকীর দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর সাথে গোপনে ঠিকাদারের আঁতাত রয়েছে। প্রকৌশলী শাহজালালের আশ্রয়ে ঠিকাদারের লোকজন ‘যেনতেনভাবে’ শিডিউল বহির্ভূতভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ব্রীজের কাজে তদারকীতে অবহেলার কারণে স্থানীয়রা পেকুয়া এলজিইডির অভিযুক্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলীর অপসারণও দাবি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে পেকুয়া এলজিইউডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: শাহজালালের সাথে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নানা দুর্যোগের কারণে বেশকিছু দিন ব্রীজের নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। ব্রীজের নির্মাণ কাজে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না দাবি করে তিনি আরো বলেন, ব্রীজের কিছু নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখানে অনিয়ম হওয়ার কোন সুযোগ নাই। তার সাথে ঠিকাদারেরও কোন আঁতাত নাই।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ জানান, শিলখালীতে ব্রীজ নির্মাণে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে। তার কার্যালয় থেকে প্রত্যেকটি উন্নয়ন কাজ যথাযথভাবে তদারকী করা হয়।

পাঠকের মতামত: